২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

২মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

স্বাস্থ্য

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা অনুযায়ী গর্ভবতী মায়েদের খাবার খাওয়ানো উচিত। কারন এই সময়টা হলো শিশুর বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়, এই সময়ে খাদ্য ঘার্তি হলে গর্ভের শিশুর পুষ্টি সল্পতা দেখা দিতে পারে। সঠিক সময়ে খাদ্য প্রদানে ব্যহত হলে শিশু ও মাকে নানান সমস্যায় পড়তে হবে। তাই সঠিক সময়ে সঠিক খাদ্য দেবার জন্য আপনি নিচে দেওয়া খাদ্য তালিকাটি অনুসরন করতে পারেন।

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা :

১. সবুজ শাক সবজি:

সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমানে ফলিক এসিড থাকে। আর এই ফলিক এসিড বাচ্চার গ্রোথ হতে সহায়তা করে। মায়ের গর্ভের বয়স যখন ২ মাস হয় তখন বাচ্চা গ্রোথ হতে থাকে খুব তারাতারি। আর যখন গর্ভবতী মা প্রচুর পরিমানে সবুজ শাক সবজি খাবে তখন আর ফলিক এসিড এর অভাব হবে না। অভাব না হলে বাচ্চা ভালভাবে গ্রোথ করতে পারবে।

২.বেগুন:

বেগুনে থাকে হলো ক্যালসিয়াম আর ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার যদি মা না খায় তাহলে বাচ্চা পাবে কোথায় থেকে। তাই গর্ভবতী মায়েদের বেগুন খাওয়ার মাধ্যমে ক্যালসিয়ামের অভাব পুরন করা যেতে পারে।

৩.মিষ্টি কুমরার বিচি, আলু, পেয়াজ , শিম:

২মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় এমন খাবার রাখা উচিত যেগুলা হজম শক্তি বাড়ায়। আর হজম শক্তি বাড়ায় হলো জিংক। তাই উচিত হবে জিংক আছে এমন জাতীয় খাবার খাওয়া।  কারন ২মাসের গর্ভবতী মায়েদের বদহজম, বমি বমি ভাব সহ নানা ধরনের সমস্যা হয়। আর এ কারনে মিষ্টি কুমরার বিচি, আলু, পেয়াজ , শিম এগুলা খাওয়া লাগবে কারন এগুলাতে প্রচুর পরিমাণে জিংক আছে।

৪.মসুর ডাল:

২ মাস গর্ভবতী মায়েদের জন্য মসুর ডাল একটি অপরিহার্য খাবার। কারন এতে রয়েছে জিংক, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য ভিটামিন। তাই মসুর ডাল গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। এমনকি মটরশুটি শাকেও রয়েছে প্রচুর পরিমানে জিংক।  যে সমস্থ উপাদান মসুর ডালে রয়েছে সেই সকল উপাদানের সল্পতায় যাতে শিশুর কোন ক্ষতি না হয় সেই জন্য মসুর ডাল নিয়মিত খাওয়া উচিত।

৫.কলা:

২ মাসের গর্ভবতী মায়েদের কলা খাওয়া উচিত। কারন এটি হলো ফাইবার যুক্ত খাবার। ফাইবারের কারনে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। আর যদি গর্ভবতী মা ঠিক মত কলা খায় তাহলে কোষ্ঠ কাঠিন্ন অনেকাংশে দূর হয়ে যাবে। তাই কলা খাওয়া উচিত। 

৬.কমলাঃ

কমলা হল ভিটামিন সি যুক্ত খাবার। আর ভিটামিন সি যুক্ত গভৃস্ত বাচ্চার ত্বক ও হাড় গঠনে সহায়তা করে। তাই ভাল ভাবে বাচ্চার ত্বক ও হাড় গঠনের জন্য প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‍সি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। এতে ফলিক এসিডের পরিমান ও বেশি থাকে।

৭.পেয়ারা:

পেয়ারাতে আছে হলো প্রচুর পরিমানে প্রটিন। আর ২ মাস গর্ভাবস্থায় প্রটিন যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। এতে মা এবং শিশু উভয়েরই উপকার হয়।

৮.বাদাম:

বাদামেও প্রচুর পরিমানে প্রটিন রয়েছে। তাই ২ মাস গর্ভবতী ময়েদের খাবার তালিকায় বাদাম রাখা উচিত।

৯.আপেল:

আপেল খাওয়ার মাধ্যমে হজম শক্তি বাড়ানো যায়। কারন যদি গর্ভবতী মায়েদের হজমে সমস্যা হয় তাহলে বমি বমি ভাব হয়। এতে মায়ের পেটে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই আপেল খাওয়া উচিত।

১০.গাজর:

গাজর ও পেটের হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য নিয়তমত খাওয়া দরকার।

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে আরো জানতে নিম্নে পড়ুন:

১১.মাল্টা:

মাল্টাতে রয়েছে হলো ভিটামিন সি, যা শিশুর হাড় ও ত্বক গঠনের সময় খাওয়া দরকার। আর গর্ভ ধারনের যখন ২ মাস হয় তখন থেকেই বাচ্চার হাড় ও ত্বক গঠন শুরু হয়। তাই এটিও খাবার তালিকায় রাখতে হবে।

১২.আঙ্গুর:

আঙ্গুরেও রয়েছে ভিটামিন সি তাই এটাও খাবার তালিকায় রাখতে হবে।

১৩.পেপে:

পেপেও হলো একটি ভিটামিন সি জাতীয় ফল। তাই ভিটামিন সির অভাব যেন না হয় সেই জন্য পেপে খেতে হবে।

১৪.জাম:

এটাও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল।

১৫.কচি মুরগি:

গর্ভ ধারনের যখন ২ মাস হয় তখন প্রচুর পরিমানে আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। আর কচি মুরগির গোস্তে প্রচুর পরিমান আয়রন থাকে। আয়রন এর অভাবে নানাবিধ সমস্যার সম্মুক্ষিন হতে হয়। তাই উচিত হলো আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়া। যেহেতু মুরগির গোস্তে আয়রন আছে তাই কচি মুরগি খাবার তালিকায় রাখতে হবে।

১৬.দুধ:

দুধ এবং সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকে, তাই দুধ এর পাশাফাশি সামুদ্রিক মাছও খাওয়া উচিত। আর দুধ খাওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যেন দুধ ভাল ভাবে সিদ্ধ অর্থাৎ রান্নাটা যেন ভাল ভাবে করা হয়। কারন অপরিপক্ক রান্না খেলে অনেক সমস্যায় পরতে হতে পারে।

১৭.ঘি:

ঘি হলো একটি চর্বি জাতীয় খাবার। আর চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার দরুন বাচ্চার মস্তিস্ক অনেক দৃঢ় ভাবে গড়ে ওঠে, তাই এই খাবারটিও ২ মাস গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকায় রাখা উচিত

১৮.মাছ:

আমরা গ্রামে অনেকেই গর্ভ অবস্থায় মাছ খাই না। আসলে মাছে অনেক পুষ্টি থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মাছের গন্ধ গভাবস্থায় অনেকে সহ্য করতে পারে না। তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবার খাওয়া উচিত।

১৯.ডিম:

ডিম হলো একটি আয়রন যুক্ত খাবার। ডিমেও রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন। তবে ডিম খাবার সময়

অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ডিম ভাল ভাবে সিদ্ধ হয়। আর না পোজ করে খেতে হবে।

২০.মাংস:

গর্ভবতী মহিলাদের প্রচুর পরিমানে না হলেও অল্প অল্প করে মাংস খাওয়া উচিত। কারন মাংসে অিনেক প্রোটিন থাকে।

২১.আনারস:

অনারস খাবার মাধ্যমে ভিটামিন সির ঘাটতি পুরন করা সম্ভব। কারন এতে অনেক প্রটিন রয়েছে।

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকার পরিশেষ:

উপরে বর্নিত খাবারের তালিকায় যতগুলা খাবারের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে চেষ্টা করবেন নিয়মিত গর্ভবতী মাকে খাওয়ানো। কারন যদি মাকে খাওয়ানো যায় মা সুস্থ থাকবে আর মা সুস্থ থাকলে তার গর্ভে থাকা বাচ্চা সুস্থতার সাথে বড় হয়ে উঠবে। গর্ভ ধারনের আগে কিছু বিষয় মাথায় রেখে গর্ভ ধারনের পরিকল্পনা করা উচিত। আর এটা হলো মায়ের বর্তমান অবস্থা, ডায়বেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষ করা। যদি ডায়বেটিস থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সকল কাজ করা।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *