ভূমিকম্প

ভূমিকম্প এর থেকেও বড় বিপদের সংখ্যায় বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর নানান দেশ ।

আন্তর্জাতিক

ভূমিকম্প এর থেকেও বড় বিপদের সংখ্যায় বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর নানান দেশ কিন্তু কেন? আমরা সবাই তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্পের কথা জানি । তুরস্কের এই ভয়াবহ ভূমিকম্প তুরস্কের সবথেকে বড় ভূমিকম্প । এই ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ এবং শত শত ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে । তুরস্কের ভূমিকম্প দেখে নড়েচড়ে বসেছে পৃথিবীর নানান দেশ । ভূমিকম্পের আশঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ ।

তবে ভূমিকম্প এর থেকেও বড় বিপদের সংখ্যায় বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর নানান দেশ এর থেকেও পর বিপদে আসছে পৃথিবীর নানান দেশের উপরে তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কিন্তু কি সেই বিপদ আজকে আমরা সেই বিপদ সম্পর্কে জানব ।

বিপত্তি হল বিজ্ঞানীরা ধারণা করছে প্রায় একুশে সালের মধ্য হিমালয়ের হিমবাহ গুলোর দ্বিতীয় অংশ গলে যাবে যার ফলে বন্যায় চলে যাবে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর নিশু অঞ্চলের অনেকগুলো দেশ । বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে কোটি কোটি মানুষ এখানেই শেষ নয় বিপদ আরও আছে । হিমালয়ে থাকা বরফগুলো যখন গলতে গলতে শেষ হয়ে যাবে তখন সেই অঞ্চলের নদী গুলো শুকিয়ে ফাটল ধরবে যার ফলে দেখা দিবে পানির চরম অভাব ।

মরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে গ্রীন হাউজ গ্যাসের প্রভাব । গ্রীন হাউজ গ্যাসের প্রতিক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন দেশ পানির নিচে তলিয়ে যাবে । গ্রীন হাউজ গ্যাস কি এবং গ্রীন হাউস গ্যাসের ফলে কি কি হতে পারে তা আমরা জেনে নেই ।

যে কারনে ভূমিকম্প এর থেকেও বড় বিপদের সংখ্যায় বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর নানান দেশ

গ্রীন হাউজ গ্যাস কি :

গ্রিনহাউজ ইফেক্ট (Greenhouse effect) : পৃথিবীকে ঘিরে এর চারপাশে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিমি পর্যন্ত রয়েছে ওজোন স্তর। যার ঘনত্ব সব জায়গায় এক রকম নয়। ২৩ কিমি ঊর্ধ্বে এর ঘনত্ব অপেক্ষাকৃত কম। এখানে রয়েছে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও অপর কয়েকটি গ্যাসের বেষ্টনী। এ গ্যাসগুলোকে একত্রে গ্রিনহাউজ গ্যাস বলা হয়। এ গ্যাসের বেষ্টনী রাসায়নিক পর্দা হিসেবে কাজ করে।

গ্রিনহাউজের কাচের দেয়াল যেভাবে তার ভেতরের উষ্ণতাকে বাইরে বিকিরণ হতে বাধা সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনিভাবে বায়ুমণ্ডলে সৃষ্ট রাসায়নিক পর্দা বা গ্যাসের দেয়াল ভূপৃষ্ঠের শোষিত তাপের বিকিরণ ঘটাতে বাধা দেয়। গ্যাসের এ দেয়াল আছে বলেই কিছু পরিমাণ তাপ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পৃথিবীতে থেকে যায় এবং এর প্রভাবে বায়ুমণ্ডল উষ্ণ থাকে। ফলে পৃথিবীতে যে উষ্ণতা থাকে তা জীবের পক্ষে বাসযোগ্য হয়। জীবের বসবাসের অনুকূল এরূপ পরিস্থিতিকে বলা হয় গ্রিনহাউজ ইফেক্ট।

গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়ার কারণ

(Causes of greenhouse effect) : পৃথিবী বেষ্টনকারী বায়ুমণ্ডলের কারণে পৃথিবী বাসোপযোগী হয়েছে । মহাশূন্যের আবহাওয়ামণ্ডলে ‘ওজোন স্তর নামে অদৃশ্য এক বেষ্টনী বিদ্যমান। এ ওজোন স্তর পৃথিবীতে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির প্রবেশ রোধ করে এবং বিকিরণ প্রক্রিয়ায় পৃথিবী থেকে আসা তাপ মহাশূন্যে পুনরায় ফিরে যেতে সহায়তা করে। মানবসৃষ্ট বিভিন্ন দূষণের ফলে প্রকৃতির ও প্রাকৃতিক নিরাপত্তা বেষ্টনি ওজোন স্তর প্রতিনিয়ত ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। গৃহস্থালি পণ্য— ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার, বিভিন্ন ধরনের স্প্রে ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয় ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন বা সিএফসি গ্যাস ।

শিল্পকারখানাতেও এ ক্ষতিকর গ্যাস ব্যবহৃত হয়। অবমুক্ত সিএফসি মহাশূন্যের ওজোন স্তর ক্ষয়কারী অন্যতম উপাদান। তা ছাড়া গৃহস্থালি ও শিল্পবর্জ্য, কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া থেকে ক্রমবর্ধমান হারে নির্গত হচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্যাস। বায়ুমণ্ডলে এসব গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে তাপ বিকিরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এবং সূর্য থেকে আগত কিছু তাপ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধরে রাখে। এভাবে একদিকে ওজোন স্তরের ক্ষয়জনিত কারণে মাত্রাতিরিক্ত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে পৌছাচ্ছে, অন্যদিকে বায়ুমণ্ডলে প্রতিনিয়ত তাপ সঞ্চিত হচ্ছে। ফলে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।

গ্রিনহাউজ ইফেক্ট-এর আর একটি অন্যতম প্রধান কারণ বনভূমি উজাড়করণ। বনাঞ্চল ধ্বংস হওয়ার ফলে বৃক্ষ কর্তৃক কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণের হারও আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রাও ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে, যা গ্রিনহাউজ ইফেক্টের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সামগ্রিকভাবে পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে।

গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়ার পরিণতি

(Consequences of greenhouse effect) : গ্রিনহাউজ ইফেক্ট শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্যই এক ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনছে। এটা প্রকৃতির ওপর এমন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে, যার ফলে বাস্তুসংস্থান হয়ে পড়ছে বিপর্যস্ত। পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১.৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ সেলসিয়াসে। পরিবেশ বিজ্ঞানীগণ আশঙ্কা করছেন আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা গ্রিনহাউজ ইফেক্টের কারণে বাড়ার প্রভাবে ইতোমধ্যে মেরু অঞ্চলে কোটি কোটি বছর ধরে জমে থাকা বরফ গলতে শুরু করেছে। সেই সাথে পর্বতশৃঙ্গে জমা থাকা বরফও গলতে শুরু করেছে।

বরফ গলা এ পানি নদীপথে প্রবাহিত হয়ে নেমে আসছে সমুদ্রে। এভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমাগত বেড়েই চলছে, যা বাংলাদেশসহ অন্যান্য সমতল ভূমির দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। বিজ্ঞানীগণ আশঙ্কা করেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমাগত হারে বৃদ্ধি পেতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশের মতো সমতল দেশগুলোর বিশাল অঞ্চল পানির নিচে চিরতরে তলিয়ে যাবে।

এ ছাড়া সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বক-ক্যান্সারসহ অন্ধত্ব ও বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হবে মানবজাতি। প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন বনাঞ্চলে দাবানল সৃষ্টি হবে। সমুদ্রের স্রোত পরিবর্তিত হবে। সবুজ-শ্যামল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। অতি বন্যা, খরা, অ্যাসিড বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস পৃথিবীবাসীর জীবন ও জীবিকা বিপন্ন করে তুলবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *